Posted in দেশ ও জাতির প্রতি দ্বায়বদ্ধতা

আসুন ডিজিটাল রাজাকারদের প্রতিরোধ করি

নিম্নের সংবাদটি একটু খেয়াল করে ধৈর্য্য ধরে পড়ুন তোঃ

বিজয় বনাম অভ্র বিতর্ক

কম্পিউটারে বাংলা লিখতে যে সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে অভ্র এবং বিজয় অন্যতম। এ সফটওয়্যার দুটির মূল পার্থক্য হচ্ছে—অভ্র ইউনিকোড সমর্থন করে কিন্তু আসকি সমর্থন করে না। আর বিজয় ইউনিকোড সমর্থন করে না, কিন্তু আসকি সমর্থন করে। সম্প্রতি বিজয়ের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা জব্বার অভ্রকে পাইরেসি সফটওয়্যার বলাতে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সাইবার বিশ্বে ‘বিজয় বনাম অভ্র’ তুমুল বাকবিতণ্ডা এখনও থেমে নেই। ফেসবুকসহ বিভিন্ন ব্লগিং এবং অন্যান্য ওয়েবসাইটে প্রতিক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক এই বিতর্ক নিয়েই এবারের প্রতিবেদন। লিখেছেন—
এসএম মেহেদী আকরাম, সাদ আবদুল ওয়ালী

বাংলা কম্পিউটিংয়ের শুরুটা যেভাবে
কম্পিউটারে বাংলা লেখার সূচনা হয় ১৯৮৬ সালে। আর শুরুটা হয় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের হাত ধরে। সে সময় শহীদ লিপির মাধ্যমে ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারে বাংলা লেখা শুরু হয়। প্রথম বাংলা সফটওয়্যারের উদ্ভাবক ছিলেন ড. সাইফ উদ দোহা শহীদ। তবে বেশি দূর এগুতে পারেনি শহীদ লিপি নামে বাংলা সফটওয়্যার। তার অবস্থান দখল করে বিজয়।

বিজয় বাংলা
বিজয় বাংলা সফটওয়্যারের শুরু হয় ১৯৮৭ সালের ১৬ মে এবং কীবোর্ড আবিষ্কৃত হয় ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর আনন্দ কম্পিউটার্সের মাধ্যমে। আনন্দ কম্পিউটার্সের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বত্বাধিকারী মোস্তফা জব্বার। বিজয় বাংলা কম্পিউটিং প্রকাশনা শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। ১৯৯৩ সালের আগ পর্যন্ত ডস ও উইন্ডোজভিত্তিক প্লাটফরমের জন্য আলাদা সফটওয়্যার চালু ছিল। ১৯৯৩ সালের ২৬ মার্চ পারসোনাল কম্পিউটারের জন্য বিজয় সফটওয়্যারের উন্নয়ন করা হয়। আর এ সময় থেকে উইন্ডোজ ও ম্যাকিনটোশে সমানভাবে বাংলা ব্যবহার চলতে থাকে।
অভ্র
কম্পিউটারে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে আরেকটি বাংলা সফটওয়্যার অভ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। এটির উন্নয়ন করা হয় ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ এবং এটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওমিক্রনল্যাব। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মেহেদী হাসান খান। বাংলা কম্পিউটিং এ তাদের অবদান অগ্রগামী। এটির মূল বৈশিষ্ট্য এটি ইউনিকোড সাপোর্ট করে। ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’ এই চিন্তাধারায় সামনে এগিয়ে চলেছে ওমিক্রনল্যাব। খুব তাড়াতাড়ি এই সফট্ওয়্যার জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কারণ, কম্পিউটারের সব ধরনের ব্যবহারকারী খুব সহজে বাংলা লিখতে পারছে। কমিউনিটি ওয়েবসাইটগুলোতে অভ্র রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বাংলা লেখার মাধ্যমে।

বাংলা কম্পিউটিংয়ে ইউনিকোড
বিজয় বনাম অভ্র নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের ব্যাপারে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ কিংবা আইটি বিশেষজ্ঞরা তেমন খোলামেলা কিছু না বললেও তরুণরা এ ব্যাপারে বেশ সোচ্চার হয়েছেন এবং তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। তবে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বা বিশেষজ্ঞদের অনেককেই ইউনিকোডভিত্তিক প্রযুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবে গণ্য করছেন। মূলত: গত চার দশকে বাংলা ভাষার ব্যবহার এগিয়ে গেছে অনেকটা। এ ক্ষেত্রে ইউনিকোড প্রযুক্তি সবচেয়ে বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। সে হিসেবে অভ্র একটি ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা সফটওয়্যার। বাংলা কম্পিউটিংয়ে অভ্র একটা শক্তিশালী ভূমিকা রেখে চলেছে।

অভ্র বিনামূল্যে পাওয়া যায়, বিজয় কিনতে হয়
ইউনিকোডে বাংলা লিখতে বা ইউনিকোডে বাংলা লেখাকে রূপান্তরে বিনামূল্যের সফটওয়্যার অভ্র। সরাসরি ইউনিকোডে বাংলা লেখার জন্য অমিক্রোন ল্যাবের (www.omicronlab.com) এ সফটওয়্যারটি ব্যবহার করেন বিভিন্ন অনলাইন কমিউনিটির প্রায় সবাই। আর আসকিতে বাংলা লেখার জন্য বিজয়ও প্রায় সব কম্পিউটার ব্যবহারকারী ব্যবহার করে থাকেন। সফটওয়্যার দুটি বাংলা লেখার জন্য বহুল ব্যবহৃত হলেও মূল পার্থক্য হচ্ছে, অভ্র বিনামূল্যে পাওয়া যায় আর বিজয় টাকা দিয়ে কিনতে হয়।

যে লেখা নিয়ে এ বিতর্কের শুরু
বিজয়ের স্বত্বাধিকারী ও বিসিএস সভাপতি মোস্তফা জব্বার দৈনিক জনকণ্ঠে গত ৪ এপ্রিল ২০১০ ‘সাইবার যুদ্ধের যুগে প্রথম পা। একুশ শতক’ শিরোনামে একটি লেখা লিখেছেন, যার মূল বক্তব্য সাম্প্রতিক সরকারি অনেক ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের ঘটনা। সুকৌশলে তিনি এর সঙ্গে জড়িয়েছেন বিনামূল্যে বাংলা লেখার সফটওয়্যার অভ্র কিবোর্ড, জাতিসংঘের ইউএনডিপি এবং নির্বাচন কমিশনকে। অভ্রকে ‘পাইরেটেড সফটওয়্যার’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার বিজয় সফটওয়্যারের পাইরেটেড সংস্করণ ইন্টারনেটে প্রদান করার ক্ষেত্রে এই হ্যাকাররা চরম পারদর্শিতা প্রদর্শন করেছে। এ হ্যাকার ও পাইরেটদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির নামও যুক্ত আছে। অভ্র নামক একটি পাইরেটেড বাংলা সফটওয়্যারকে নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে ইউএনডিপির অবদান সবচেয়ে বেশি। ফলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশন সেলের ওয়েবসাইট হ্যাক হলে তার দায় থেকেও ইউএনডিপিকে ছাড় দেয়া যায় না।’

শুরু হয় প্রতিবাদের ঝড়
তার এই লেখার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভ্র ব্যবহারকারীরা প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। ফেসবুক, সচলায়তন, সামহোয়ার ইন ব্লগ, প্রথম আলো ব্লগ, আমার ব্লগ, রংমহল ফোরাম, প্রজন্ম ফোরাম, আমাদের প্রযুক্তি, টেকটিউনস, ব্যক্তিগত ব্লগসহ বিভিন্ন কমিউনিটি সাইটে এ নিয়ে নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানানো হয়। কিছু কিছু সাইট তাদের ব্যানারও পরিবর্তন করে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে।

লিখিত অভিযোগ কপিরাইট অফিসে
এত কিছুর পরও মোস্তফা জব্বার ক্ষান্ত হননি। এরই মধ্যে তিনি কপিরাইট অফিসে লিখিত অভিযোগও করেছেন অভ্র সফটওয়্যারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অমিক্রোন ল্যাবের প্রধান নির্বাহী মেহ্দী হাসান খানের বিরুদ্ধে। ফলে কপিরাইট অফিস থেকে মেহ্দী হাসান খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সর্বশেষ জানা গেছে, মেহ্দী হাসান খান এ ব্যাপারে আইনজীবীর পরামর্শে প্রয়োজনীয় করণীয় বিষয়ে এগুচ্ছেন। বিভিন্ন কমিউনিটি সাইটসূত্রে জানা গেছে, তারা মোস্তাফা জব্বারের বিরুদ্ধে মিছিল করাসহ ও পোস্টার প্রচারের আয়োজনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আসলে পার্থক্য কতটুকু?
মূলত বিজয় কিবোর্ড লেআউটের সঙ্গে সঙ্গে ইউনিজয় লেআউটের অনেক পার্থক্য রয়েছে। যেখানে কিবোর্ড লেআউটের একটি কির পার্থক্য থাকলে নতুন একটি কিবোর্ড লেআউটের জন্ম দেয়, সেখানে মোস্তফা জব্বারের অভিযোগ অবান্তর। কিবোর্ড লেআউটের গ্রহণযোগ্য ইতিহাস জানতে (http://en.wikipedia.org/wiki/Keyboard_layout) লিঙ্কে গেলে বিষয়টা পরিষ্কারভাবে জানা যাবে।

নির্বাচন কমিশন ও ইউএনডিপির প্রসঙ্গ
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন খরচ কমানোর জন্য সিদ্ধান্ত নেয় এরকম একটা সফটওয়্যার তারা নিজেরাই ডেভেলপ করে নেবেন। বুয়েটের একজন শিক্ষককে সে দায়িত্বও দেয়া হয়। তারা সেটাই করেন, শুধু বাংলা লেখার অংশটা ছাড়া। আবার জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে তারা অভ্র ব্যবহার করেছিলেন, বিনিময়ে তারা স্বীকৃতি সনদও দিয়েছেন।

শেষ কথা হলো, অভ্রকে যদি সত্যিই বিজয়ের পাইরেটেড মোস্তফা জব্বার মনে করেন, তাহলে তার উচিত হবে আইনের আশ্রয় নেয়া। তাতে সত্য এবং মিথ্যার পার্থক্য উন্মোচিত হবে।
mehdi.akram@gmail.com
walisearch@yahoo.com

বিজয় বনাম অভ্র : কিছু প্রতিক্রিয়া
বিজয় বনাম অভ্র বিতর্কের তীব্র প্রতিক্রিয়া এখন বিভিন্ন ব্লগসাইটে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, আমারবন্ধু, সচলায়তন, সামহোয়ারইন, আমারব্লগ, মুক্তমনা, টেকটিউনস, প্রথম আলোসহ আরও অনেক ব্লগ সাইট। পাশাপাশি আমাদের কাছেও অনেকে ইমেইল ও চিঠিতে জানিয়েছেন তাদের প্রতিক্রিয়া।

এখানে কি বিজয়ের কপিরাইট (১৯৮৮?) নাকি পেটেম্লট (২০০৮) নিয়ে অভিযোগটি এসেছে? দুটি কিন্তু দু’রকমের ব্যাপার। বিজয়ের প্যাটেম্লটটি নিজেই ধোপে টিকে কিনা তা সন্দেহের ব্যাপার (যেহেতু ২০০৮ নাগাদ ঢ়ত্রড়ত্ ধত্ঃ প্রচুর আছে), কিন্তু কপিরাইটটি আইনগতভাবে পাকাপোক্ত হতেই পারে (যদি না এটা প্রমাণিত হয় বিজয়ের লেআউট অন্য কোনো জায়গা থেকে নেয়া মাত্র। মুনীর লেআউটের সঙ্গে বিজয়ের পার্থক্য কতটুকু? কয়টা কী?।
—রাগিব হাসান, প্রধান প্রশাসক, বাংলা উইকিপিডিয়া

কোটি টাকা দিয়ে নির্বাচন কমিশনে বিজয় কিবোর্ড বিক্রি করতে না পেরে মোস্তফা জব্বারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ঢালাওভাবে সবাইকে অপরাধী বানিয়ে চলেছেন। এমনকি ইউএনডিপিকেও অপরাধী বানাতে দ্বিধা করেননি। কোনো যোগ্যতা ছাড়াই তিনি প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন পদে বসে আছেন, তখন সাধারণ মানুষের হাতে কি করে প্রযুক্তি ছড়িয়ে যেতে পারে, তাতে তার কোনো মাথাব্যথা নেই। যে বিজয় করে তার এত মাথাব্যথা, সেই বিজয়ের প্রোগ্রামার পাপ্পানার কি কোনো খবর তিনি রেখেছেন?
—রিফাত, সিইসি ডিপার্টমেন্ট, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি

বিজয় কিবোর্ডের অংশ বিশেষ বলতে কি বোঝান হচ্ছে? বিজয় কিবোর্ডে ‘অ’ থেকে ‘ ঁ’ পর্যন্ত সবগুলো অক্ষর আছে। মোস্তফা জব্বারের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে অন্য কোন কিবোর্ডে বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করলেই সেটা পাইরেটেড সফটওয়্যার হয়ে যাবে। আসলে নির্বাচন কমিশনের পাঁচ কোটি টাকা হাতছাড়া হয়ে যাবার পর ওমিক্রনল্যাবের এবং অভ্র এর উপর উনার আক্রোশটা অতিমাত্রায় বেড়ে গেছে। উনার যদি এতটাই আত্মবিশ্বাস থাকে তাহলে উনি আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছেন না কেন?
—আশরাফুল হক, ইমেইলে পাঠিয়েছেন

জনকন্ঠে দেয়া মোস্তফা জব্বারের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার, নির্বাচন কমিশন আর ইউএনডিপি টাকা খরচ না করে অভ্র ব্যবহার করেছে বলেই তার গাত্রদাহ। তিনি ফেসবুকে স্বীকার করেছেন যে, অভ্র তার ৫ কোটি টাকার ব্যবসার ক্ষতি করেছে। মেহ্দী যদি তার উদ্ভাবিত প্রযুক্তির মাধ্যমে জনগণের ৫ কোটি টাকা মোস্তফা জব্বারের পকেটে যাওয়া থেকে ঠেকানোর জন্য আমরা মেহ্দীকে স্যালুট দেই।
—নাবিউল, ২৩-০৪-২০১০ তারিখের ব্লগ সাইটে
বাংলাদেশের বাংলা কম্পিউটিং এ ‘বিজয়’ এর ভূমিকা অস্বীকার করার উপায় নেই, আমি শ্রদ্ধাচিত্তে তা স্মরণ করি, যদিও এর আউটপুট যথাসম্ভব আপনি ভোগ করেছেন। টাকা দিয়ে কেনা সফটওয়্যার এ আপনার এবং আপনার ছেলের ছবি দেখতে বাধ্য করছেন। এই বিজয়ের কল্যাণেই আপনি একজন আইটি মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। যদিও আপনার আইটি জ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পড়া কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্রের সমতুল্য; অন্তত পত্রিকায় আপনার কলামগুলো পড়লে তাই মনে হয়। প্লিজ পড়াশোনা করে কলাম লিখুন, পাইরেসি কাকে বলে বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি শুধু মানুষকে বিভ্রান্তই করছেন না, সরকারি সেক্টরে ওপেন সোর্সকে নিরুত্সাহী করছেন। প্লিজ ব্যক্তিস্বার্থের বলয় থেকে বেরিয়ে আসুন।
—রাব্বানি, ২৩-০৪-২০১০

আপনি কি কোন দিন বিল গেটসের ছবি কোথাও আপনার কম্পিউটারে দেখেছেন? বলছি কেন, আপনি যদি বিজয় ইনস্টল করেন, যতবার কম্পিউটার চালাবেন, ততবার পর্দায় ভেসে উঠবে, বিজয়ের লেখক কথিত এক লোকের ছবি। এটা কি ইউজারকে অত্যাচার করা না? শেষকথা হল, লেআউট যদি কপিরাইট হয়, তাহলে, দুই কোম্পানির কিবোর্ডে একই ইংরেজি কেমনে লেখে?!
—শৈন দৃষ্টি, ২৩-০৪-২০১০

মূলত ইউনিকোডের কল্যাণেই বাংলায় ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। আমি নিজে বাংলা টাইপ করতে ভয় পেতাম, কিন্তু অভ্র কিবোর্ড আসার পর এখন আমি ইংরেজির চেয়েও দ্রুতগতিতে বাংলা টাইপ করতে পারছি।
—সুশান্ত দাস গুপ্ত, প্রধান সঞ্চালক, আমার ব্লগ ডটকম

আজ বাংলায় যত ই-মেইল, ওয়েবসাইট, ব্লগ, অনলাইন ফোরাম ইত্যাদি দেখি, তার সবই কিন্তু অভ্রের হাত ধরেই এসেছে।
— সৌমিত্র কুমার পাল , সামহোয়ারইনব্লগডটনেট

অভ্র একাই বাংলা কম্পিউটিংকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। বিনে পয়সায় এত ভালো সফটওয়্যার খুব কম দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গেও অভ্রের জনপ্রিয়তা কম নয়। এর বিপক্ষে যে কেউ কিছু বলতে পারেন সেটা জেনে অবাক লাগছে। বাঙালি সবসময়েই অভ্রের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে কম্পিউটারে বাংলা লেখাকে সহজ করবার জন্য।
—পিয়াল খন্দকার কুন্ডু, ২৪-০৪-২০১০

উপরোক্ত সংবাদটির সুত্রঃ বিজয় বনাম অভ্র বিতর্ক

৫২’ তে যে ভাষা শহীদদের রক্তে বাংলাভাষা মুক্ত হয়েছিল, শুধু মাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষায় মোস্তফা জব্বারের মতো লোকেরা আবার ৫২’কে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। তাঁকে যোগ্য সহযোগীতা আর সমর্থন করে যাচ্ছেন স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলার গনতান্ত্রিক সরকারের আমলারা। ৫২ ‘তে আমার আপনার ভাই, বাবা, চাচার রক্তে দেশের মাটিকে লাল করেছিলো পাকিস্তানিরা। আমার মায়ের ভাষার কথা বলার শক্তি কেড়ে নিতে চেয়েছিলো। সেখানে থেকে নেয়া শিক্ষাকে “বুড়ো আঙ্গুল” দেখিয়ে মোস্তফা জব্বারের মতো লোকেরা তাদের কুটবুদ্ধি আর বর্তমান সরকারের আমলাদের সহযোগিতায় এবার উঠে পড়ে লেগেছে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” গড়ার স্বপ্নকে ধুলিস্যাৎ করতে। আগামী দিনের প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়তে এরাই প্রধান বাধা, ভাষা সন্ত্রাসী, “ডিজিটাল রাজাকার”।

আমার দাবি


শুধু প্রতিবাদে কিছু হবে না। জব্বারের মতো লোকদের প্রতিরোধ করার সময় চলে এসেছে। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের সামান্য ছাড় দেয়ার ফসল হলো তাঁরা বিগত গনতান্ত্রিক সরকারের আমলে এসে স্বাধীন বাংলার রক্তস্নাত পতাকা নিজের গাড়িতে লাগিয়ে রাষ্ট্রীয় সুযোগসুবিধা নিয়েছে আর বাংলার জনগনকে করেছে নিষ্পেষিত। আর যে মুখের ভাষা কেড়ে নেবার প্রতিবাদে বাংগালি রক্ত দিয়েছিলো সে ইতিহাস নতুন করে লেখানোর উদ্যোগ নিয়েছেন মোস্তফা জব্বার। নিজে যে সফটওয়্যারের কপিরাইটের মালিক তাঁর একটা ছোট্ট অংশের সামান্য পরিমার্জন যিনি করতে অক্ষম। আমার দাবি “আমাদের প্রযুক্তি ফোরাম” এর পক্ষ থেকে একটা মানববন্ধন এবং সেটা হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কিংবা কার্যালয়ের সামনে। দিনের বেলায় মানববন্ধন শেষে সন্ধ্যায় স্মারকলিপি পেশ করবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর। আমি ঢাকাতেই থাকি আর ঢাকাতেই প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয় এবং বাসভবন বলে শুধু ঢাকাবাসী সকল বাংলা ফোরামিকদের আহবান করছি সশরীরে মানববন্ধনে অংশ নিতে। কারন অন্যান্যদের হয়ত এই গরমে খুব কষ্ট হবে ঢাকা পর্য্যন্ত ভ্রমন করতে, তথাপি ঢাকার বাইরের কেউ আসতে চাইলে তাকে অবশ্যই শুভেচ্ছা সহ স্বাগতম। আসুন ডিজিটাল রাজাকারদের প্রতিরোধ করি।