Posted in কিভাবে কিভাবে যেন লিখে ফেললাম, খেয়াল করুন, জেনে রাখুন, পরিচয় পর্ব, প্রযুক্তি নিয়ে আউলা চিন্তা, ভালো লাগা, ভালোবাসা

K ফর কাউয়া আর A ফর এটিএস


১৫ই ডিসেম্বর ২০১১ইং সকাল ৭:০০

কাঁ কাঁ, কাঁ কাঁ, কাকের কলরব। কোলকাতার কাকের কলকাকলীতে কর্নকুহর কম্পিত। কাকের এই KA KA শব্দ যে এই সকাল থেকেই জ্বালাতন শুরু করে দিলো তা বলাই বাহুল্য। জীবনে প্রথমবারে মতো ধনুষ্টংকারের আতংকে আতংকিত হবার মতো বিষয়খানি যে এই KA KA শব্দের বিস্তৃতির মধ্যেই অন্তর্নিহিত তা কে জানতো তখন? দুপুর না গড়াতেই ভাবসম্প্রসারন যোগে পরিষ্কার বোঝা গেলো K ফর কাউয়া আর A ফর এটিএস (ধনুষ্টংকার প্রতিষেধক টিকা) 🙂 ।

বুঝতে পারছি। আজকে আমার এই লেখার শুরুর অংশটুকু পড়বার পরে আপনাদের প্রত্যেকের মনে নানান রকম প্রশ্ন উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছে। আমি আবার সম্মান শ্রেনীতে পড়বার সময় আমার মূল বিষয় ইংরেজী সাহিত্যের সাথে সাথে অতি আহ্লাদের সাথে বেছে বেছে মনোবিজ্ঞান, দর্শন আর ইতিহাসকেই আঁকড়ে ধরেছিলাম (আমিই আঁকড়ে ধরে ছিলাম না স্বয়ংক্রিয় বাছাই প্রক্রিয়ায় ওঁরাই আমায় আঁকড়ে ধরেছিলো সেই নিয়ে আরেক কাহিনী বলতে হবে 😀 ) কি না ??? তো সেই ভয়াবহ জ্ঞানার্জনের বোধটুকু থেকেই আপনাদের মনের সেই উঁকিঝুঁকির ক্ষেত্রের বিস্তৃতি যতটুকু বুঝতে পারছি তা হলো —
আসুন অনুমান করি (১) — রিং ভাই মনে হয় কাকের KA KA ধ্বনিতে বিরক্ত হয়ে কোলকাতার কাকবাহিনীর কোন/কতিপয় বীর সেনানীকে গুলাতি/ঢিল অস্ত্রের আঘাতে আহত করেছেন। এবং সেই আঘাতের বদলা নিতে কাকবাহিনী ওনাকে সুকঠিন “কাকচঞ্চু” কি জিনিষ? তা বুঝিয়ে ছেড়েছে। অতঃপর . . .

আসুন অনুমান করি (২) — রিং ভাই মনে হয় এবারের কোলকাতা অভিযানের প্রথম নিরীক্ষা “কাক বাহিনীর আদ্যোপান্ত” বিষয়েই করছিলেন। হঠাৎই কাক বাহিনীর দুই পক্ষের মধ্যকার দ্বন্দ্ব যুদ্ধের ‘ক্রসফায়ারে’ পড়ে রিং ভাই আহত। অতঃপর . . .

আসুন অনুমান করি (৩) — ঢাকায় রিং ভাই নিজের গৃহে পালিত কবুতর (কবুতর আকৃতির মুরগী বলাই সমীচিন, বহু কষ্টে এঁরা কদাচিৎ ওড়াওড়ি করে) গুলোকে বাঁচাতে নিয়মিতই কাক বাহিনীর প্রতি গুলাতি ও বরই বিচির মর্টার নিক্ষেপ করেন। এবার ওরাই জরূরী তারবার্তা দিয়েছিলো কোলকাতা ব্যাটালিয়নে। অতঃপর . . .

আসুন অনুমান করি (৪) — রিং ভাইয়ের কোলকাতাইয়্যা কোন আত্নীয় বোধহয় রিং ভাইয়ের মতোনটাই দেখতে (মাথায় বিশাল টাক এবং ফিগার মাশাল্লাহ আড়াইমন চালের বস্তার চাইতে কম কিছু না)এবং ঐ ব্যক্তিটি কিছুদিন আগেই এই কাকবাহিনীর কোন সদস্যদের ষাটফুটি প্রাসাদ (নারকেল গাছের ডগায় . . .) তছনছ করেছেন। তো “কালা কালা উয়ো মেরা বাপকা শালা” সুত্র মতেই রিং ভাই প্রাতঃকালীন ভ্রমনকালে প্রথমে টার্গেটেড এবং পরে . . .। অতঃপর . . .

আসুন অনুমান করি (৫) — ‘রিং-দ্য ডন’ অবশেষে . . .। কাউয়ার ক্ষপ্পরে, তাও উনার নানাবাড়ির পালাপোষা কাউয়া। ব্যাটায় বাংলার “খিড়কী” ওএস ব্যবহারকারীদের আর লিনাক্স ব্যবহারকারী(চিংড়ি মার্কা)দের বহুত জ্বালাতন করে। দুমদাম কথার পিঠে কথা শোনায়, যথা-তথা, যহন-তহন। পাইরেটস (পাইরেসী করে যাঁরা) দের হালায় ‘ডাকাইত’ না কইয়া, কয় ‘চোর’? হালার দুঃসাহসডা দেখছোস? হালায় আমাগো লাহান সফটওয়্যার চোর (থুড়ি ডাকাইত)গো মান-ইজ্জত সব ফালুদা কইরা ফালাইলো!!! আরে আজিব, তুই নিজের দ্যাশরে ভালোবাসবি তো বাস, তোরে বাধা দিছে ক্যাডা? কিন্তু দেশের বেবাকরে সঠিক পথ দেখানোর ঠিকা কি তরে দিছে? আমাগোরে চুরি/ডাকাতি করবার থন বিরত রাখবার চায়!! দ্যাশের মান-ইজ্জত বাড়াইবার চায়। বহুত বাড়ছিলো হালায়। আমরা তো হালার বহুত হেরা ফেরী করছি এই বছরের শুরুর দিকেরথন, ঠেঙ্গানিও দিছি (অনলাইন), মুরুব্বীগোরে দিয়া হুমকি দিছি, শাসাইছি, বদনাম গাইছি(অনলাইন, অফলাইন)। মাগার হালায় সিধা হয় নাইক্ক্যা। হালায় এক্কেরে কুত্তার লেঞ্জার লাহান তেড়ি খাইয়্যা দেশের মান বাঁচাইবার লাইগ্যা লাগছে। সরকারী-বেসরকারী ভার্সিটিগুলানে ভিজিট দিয়া দিয়া ‘ইয়াং জেনারেশনের’ ব্রেইন ওয়াশ করতাছিলো। সবতেরে বুঝাইবার চাইছে কেমতে দ্যাশের তথ্য পাচার হওন ঠেকান যাইবো। কেমতে দ্যাশের নাম চোর-ডাকাইতের খাতার থন সম্মানের খাতায় তোলন যাইবো। আরে মর জ্বালা, এই চুরি-চোট্টামি-ডাকাতি এইগুলান না থাকলে আমাগোর লাহান ‘কাউয়া’রা করবোডা কি? এইগুলান তো আমরা উত্তরাধিকার সুত্রে পাইয়া আইছি। অখ্খন এইগুলান ছাইড়া যদি বেবাকতে ভালা মানুষের লাহান চলবার চাই, তো দ্যাশ টিকবো? হালারে বুঝাইবারই পারি নাইক্ক্যা যে আমাগো লাইগ্যাই মিডিয়ার বরাতে আমগো দ্যাশডারে বৈদেশিক দাতাগোর সামনে ঝুড়ির লাহান বিছাইবার পারে আর আমরা কাড়ি কাড়ি ডলার (শর্তযুক্ত ভিক্ষা) আনবার পারি। আরে হালায় “ঋণ কইরা ঘি” তুই খাবি না তো কি হইলো? আমরা তো খামু, না কি? এইবার !! এইবার হালায় !!! বিদেশী কাকবাহিনীর হাতে সাইজ হইছে। অতঃপর . . .

“কৌন বনেগা ক্রোড়পতি” বা বাংলায় “কে হতে চায় কোটিপতি”র চাইতেও আপনাদের হাতে এখন একটা অপশন বেশী। আর এগুলোর থেকে আপনার পছন্দেরটি বেছে নেবার অথবা নিজস্ব কোন মন্তব্য করার সময়সীমা আগামী ২১শে ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ১০:১১:১০ অবদি। বেছে নিন এবং মন্তব্য করতঃ ফলাফলের অপেক্ষায় থাকুন। ২১ তারিখে লেখার বাকী অংশ প্রকাশিত হলে আপনার বেছে নেয়া অপশনটুকু অথবা মন্তব্যের সাথে মিলিয়ে নিন আমার নিজের অভিজ্ঞতা।

যদি মিলে যায় আংশিক কিংবা হুবহু, তো বিনিময়ে আপনি পাবেন, “আমার ডান বাহুতে প্রযুক্ত সেই ঐতিহাসিক ধনুষ্টংকার টীকা দেবার দৃশ্যে”র একখানি ঝকঝকা ফটুক (নোকিয়া ৭৬১০ সুপারনোভা’র ফ্ল্যাশযুক্ত ক্যামেরায় তোলা 😀 ) এবং হোটেল আমেনিয়া(পশ্চিববাংলা’র অধিবাসীদের জন্য)য় রুমালী রুটি ও মুরগীর ঝালফ্রাই সহযোগে অথবা চায়নাটাউনে(দিলকুশা, ঢাকা)র ফ্রাইড রাইস, ভেজিটেবল ও চিকেন কারী সহযোগে ইনশাল্লাহ আমার সাথে একত্রে দুপুরের খাবার উপভোগ করার সুযোগ। (এপার বাংলা ওপার বাংলা দুইপারের দুইজনকে বিজেতা করা হবে এই ঝালঝাড়া অনুমান অনুমান কুইজে, যিনি সবার আগে মূল ঘটনার সবচাইতে নিকটতম অনুমান/নিজ বক্তব্য করবেন তিনিই হবেন বিজয়ী)

লক্ষ্যনীয়ঃ পশ্চিমবঙ্গবাসী হলে উপহার বিজেতাকে আগামী ২৫শে ডিসেম্বরে এই পুরষ্কার গ্রহন করতে হবে। বাংলাদেশের বিজেতা বকেয়া থাকবেন, আমি দেশে ফেরবার আগে দিয়েই আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।

আসুন মূল অভিজ্ঞতাটুকু জেনে নিই —
১৫ই ডিসেম্বর ২০১১ইং সকাল ১০:০০

মূল কাহিনীর প্রস্তুতি পর্বের শুরুটা অবশ্য আরো প্রায় দিন চল্লিশেক আগে। নিশ্চয়ই জানা আছে যে কোলকাতায় প্রায় দিন চল্লিশেক আগে সর্বশেষ বৃষ্টিপাত হয়েছিলো? তো সেই বৃষ্টির পানি আমার এক ফুপাতো বোনের বাসার ছাদে জমে গিয়ে কিঞ্চি শ্যাওলা উৎপন্ন করেছিলো। আর সেই শ্যাওলা শুকিয়ে চলটা ধরে রয়েছে এই দিন চল্লিশে। তো দিন সাতেক ধরে ভোরের কুয়াশায় সেই শ্যাওলা কিঞ্চিৎ ভিজে থাকে আর সকাল সাড়ে আটটা/নয়টা’র দিকে রোদ উঠলে সেগুলো বেশ সুন্দরই দেখায়। পায়ের নীচে পড়লে হালকা সুড়সুড়ি বোধের জন্ম দেয়। কোলকাতায় আসলে যে বাসায় আমি প্রায়শই অবস্থান করি আর যে ছাদটাতে আমি নিয়মিত সকাল বেলা হাঁটাহাটি করি। আর “ছাদটা” বললাম কেননা আমার এই বোনের বাড়ী তিনটে আর সবগুলোই চার তলা। এই ছাদটা ১নং বাড়ীর একটা ইউনিটের একতলার ছাদ। উপরের দিকে আর বাড়ায়নি বলে আমার খুব সুবিধে হয় এই ছাদটায় হাঁটতে (একটানা প্রায় ১২৫০ বর্গফুটের ছাদ), উপরি হিসেবে ছাদটা নিরাপদ, মানে চারদিকেতেই প্রায় চারফুট উঁচু দেয়ালে ঘেরা। (চারতলা গুলোর ছাদ অবদি উঠতে গেলে কলজেটা একেবারে শুকিয়ে যায়)

তো এই ১৫ই ডিসেম্বর সকালেও অন্যান্য দিনকার মতোই হাঁটাহাটির অভিপ্রায়ে ছাদে উঠেছি। বছর আষ্টেক এর এক নাতি এসে জুটলো (কোলকাতায় বর্তমানে আমার নাতি-নাতনির সংখ্যা মোটামুটি ১ ডজন :D)। “ও দাদা, এসো না ক্রিকেট খেলি?”। নাতির আবদার বলে কথা। লেগে গেলাম নাতিকে বল ছুঁড়ে মারতে। নাতি ব্যাট দুমদাম চালাচ্ছে আর আমি একটার পর একটা বল ছুঁড়ে মেরে বেশ মজা নিচ্ছি। তো পরপর নাতিকে ক্যাচ আউট করবার পর নাতি অফার দিলো ব্যাটটা হাতে নিতে। তো ব্যাটটা হাতে নিয়ে বেশ বাগিয়ে ধরে নাতির বোলিং মোকাবিলা করতে লাগলাম। কি সেলুকাস এখনো হালকা পাতলা মাটি কামড়ানো (আসলে হবে ঢালাই কামড়ানো) অফড্রাইভ, অনড্রাইভ করতে পারছি, বলের লাইনে পা যাচ্ছে মোটামুটি। মনটা বেশ চাঙ্গা হয়ে উঠছে। তো নাতি বেশ কটা বার ভালো বল করার পর একটা বল অফসাইডে স্কয়ার কাট করার মতো দিয়ে বসলো। আমার কি আর দেরী সয়? একেবারে সপাটে চালিয়ে দিলাম। সাঁ করে বল বাতাসে ভেসে ছাদের বাউন্ডারী দেয়ালে উপর দিয়ে গিয়ে আপার বাগানে গিয়ে পড়লো। নাতি ঝেড়ে এক দৌড় দিলো সিঁড়ির দিকে আর আমি ছাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়ে গেলাম। ত্রিশ সেকেন্ড বাদে নাতি বাগানের মধ্যে থেকে ছাদে বলটাকে ছুঁড়লো আর আমি সেটাকে ক্যাচ ধরতে পিছনের দিকে হাঁটতে লাগলাম। বলা নেই কওয়া নেই হুট করেই ডান পায়ে শুন্যতা অনুভব এবং শরীরের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে পড়ে গেলাম ছাদের মেঝেতে। কি হলো কি ব্যাপারটা বুঝে নেবাই আগেই ডান পায়ের নীচে বেশ যন্ত্রনা অনুভূত হলো। ডান পা টাতে তখনো নিয়ন্ত্রন ফিরে আসেনি তাই হাত দিয়েই টেনে নিয়ে দেখি পায়ের তলায় ভেটকি মাছের মেরুদন্ডের তিনটে কশেরুকা একেবারে পুরোটা সেঁধিয়ে গেছে পায়ের তলা দিয়ে। প্রায় মিনিট ঘুরে যাবার পর মুখ দিয়ে বেরুলো — উহ!

ছাদে এতক্ষন যে দর্শকরা আমাদের দাদা-নাতির খেলা উপভোগ করছিলো তার প্রায় সবাইই আমার ভাগ্না-ভাগ্নী নইলে ভাতিজা-ভাতিজী। এর মধ্যে থেকে এক ভাগ্নী একেবারে চিলের মতো ছুটে এসে আমার পা টাকে তুলে ধরলো। তারপর দুমদাম বলা নেই কওয়া নেই দে হ্যাঁচটা টান (কাঁটাটাকে ধরে)। কাঁটা বেরিয়ে আসার বদলে ভেঙ্গে ওঁর হাতে চলে এলো (একটা কশেরুকা পুরোটাই বেরিয়ে এসেছে পুরো সোয়া ইঞ্চি সাইজে, আরেকটা ভেতরেই রয়ে গেছে গোড়া থেকে ভেঙ্গে) এবং ও পুরোই হাতে কাঁটার ভগ্নাংশটুকু ধরে হতভম্ব হয়ে বসে রইলো। এর মধ্যেই নীচ থেকে খবর পেয়ে আপা উপরে উঠে এসেছেন। উঠেই প্রথম দৃশ্য — “আমার পা থেকে রক্ত গলগলিয়ে ঝরছে”। আর যায় কোথা? ছাদ ঝাড়ু দেবার কথা বলেছিলেন সকালে যে কাজের লোকেদের তাঁদের দাবড়ে, বকাঝকা করে একাকার। এরই মধ্যে ঐ ভাগ্নী ধাতস্থ হয়েছে এবং বেশ খানদানী সাইজের একখানা সুঁচ ও শন (চিমটা) জোগাড় করে এনেছে। তারপর তুমুল উৎসাহে চললো আমার পায়ের তলায় অস্ত্রোপাচার। কাঁটার টুকরো ব্যাটা ধবধবে সাদা রং ধারন করে মাংসের সাথে মিশে থাকবার পরেও ভাগ্নীর চোখ তাকে ঠিকই খুঁজে পেলো আর চিমটার শক্ত ও মজবুত টানে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হলো।

মাগার এরই মধ্যে আমার ঠ্যাং আর আমার নেই। ব্যথায় টনটন করছে আর তা মাথার ব্যথাটাকে এমন বাড়িয়ে দিলো যে তা বলে বোঝানোর উপায় থাকলো না। বেলা এগারোটা নাগাদ জীবানুমুক্ত করে ব্যান্ডেজ বেঁধে ছেদে আমাকে নিশ্চিত করলো পাশের বাড়ীতে থাকা ডাক্তার। কিন্তু তাতে কি? ঠ্যাং এর তলা আপাতত ব্যথামুক্ত হলেও মাথার যন্ত্রনায় আমার তো ত্রাহি ত্রাহি দশা। যাই হোক কোনমতে বিকেল অবদি পার করলাম। তারপরেই হলো খেলা শুরু, গায়ে কাঁপুনি দেয়া শুরু হলো সাথে গা গরমের অনুভূতি আর হাতে পায়ে খিঁচ ধরে যাবার মতো অবস্থা। ডাক্তারকে ইমার্জেন্সী কল করা হলো। মাগরিবের নামাজ অবদি দেখলেন ডাক্তার তারপর বললেন — “করার কিচ্ছু নেই, এটিএস একটা ঢুকাতেই হবে।” যাই হোক বারো রুপি দিয়ে এটিএস অ্যাম্পুল কিনে আনা হলো সাথে পাঁচ রুপি মূল্যের ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ। দুই মিনিটে খেল খতম। ডাক্তার বাবু নিমিষেই আমার ডান বাহুতে প্রযুক্ত করে দিলেন আমার জীবনের প্রথম এটিএস (ধনুষ্টংকার প্রতিরোধক টীকা)।

এতক্ষন কাহিনীটা শোনবার পর আপনাদের মনে সেই আবারো সন্দেহ এবং ভুঁরু তিন/চার ভাঁজে কুঞ্চিত করে একটা প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন — “এখানে কাক (কাউয়া) এলো কোত্থেকে?”। দুশ্চিন্তার কিচ্ছু নেই উত্তর দেবার জন্য আমি এখনো বহাল তবিয়তেই আছি। তো শুনে নিন। কোলকাতার এই অঞ্চলের কাকেদের একটা বদভ্যাস হলো ও বাড়ীর হাড্ডি/এঁটোকাঁটা তুলে নিয়ে এসে এ বাড়ীর ছাদে ভক্ষন করা। তো সম্ভবত সেই রকমের একটা কাহিনী করেছে কোন কাক ১৪ই ডিসেম্বর সন্ধ্যেতেই (আমি এদিন বিকেলেই কোলকাতায় পৌঁছেছি)। আর ওই কাঁটাটা সেই শ্যাওলার মধ্যেই রয়ে গেছে যেটা ছাদ ঝাড়ু না দেবার কারনে পরিষ্কারভাবে দেখা যায়নি। আর তারপরের ঘটনা যে কি ঘটেছে তা তো দৃশ্য মিলিয়ে কল্পনার ফ্রেমে সাঁটালেই খাপে খাপে মিলে যাবে। তাই না? 😀