Posted in প্রযুক্তি নিয়ে আউলা চিন্তা

হালের ফ্যাশান আর ভবিষ্যৎ বালা-মুসিবত


বুধবার, জুলাই 28 2010 সময় 13:13:13

মেয়েঃ হাই বাপ্স, হাউ আর ইউ?
বাবাঃ মারে ভালোই তো ছিলাম এতক্ষন কিন্তু তোর কথা শুনে তো মা দ্বন্দ্বে পড়ে গেলাম
মেয়েঃ হোয়াই বাপ্স?
বাবাঃ মারে আমি তো তোর একটাই ‘বাপ’ কিন্তু তুই যেভাবে ‘s’ যোগ করে ‘বাপ্স’ বলছিস তাতে তো মা আমি নিজেই সন্দিহান।
মেয়েঃ ওহ বাপ্স! তুমি কিছুই বোঝ না। এটা স্টাইল, নাও এডেজ ইটস অ্যা ফ্যাশন বাপ্স
বাবাঃ তাই নাকি! একটা বাবার জায়গায় তাহলে এখন ‘বহুবাবা(বাপ্স)’ই চলছে! বেশ বেশ
মেয়েঃ বাপ্স তুমি আমায় কোন সাইট থেকে ডাউনলোড করেছিলে? ওদের কি “সিকিউরিটি সার্টিফিকেট” ছিলো না? আর থাকলোই বা ডাউনলোড করার আগে ভালো একটা অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে যদি একবার ও স্ক্যান করে নিতে? তাহলে তো আমাকে আর এত ঘন ঘন জ্বর-কাশি ইনফেক্ট করতে পারতো না।
বাবাঃ বলিস কিরে মা! তোকে তোর মা জন্ম দিয়েছে, আমি তোকে ডাউনলোড করবো কেনো?
মেয়েঃ ওহ বাপ্স তোমরা আজো সেকেলে রয়ে গেছো। এখন কি আর সে সময় আছে? কেনো যে ভ্যালুলেস পেইনগুলো নিতে তোমরা?
বাবাঃ তা মা, তোর শরীর এখন কেমন আছে? সকালে কিছু খেয়েছিস?
মেয়েঃ হাউ ফানি বাপ্স! তুমি আমার টুইটার আর ফেসবুক স্ট্যাটাস চেক করোনি? আর তোমাকে তো একটা পার্সোনাল মেইল ও করেছিলাম। রিড দ্যাট কেয়ারফুলি।
বাবাঃ কি যামানায় যে এসে পড়লাম। সরাসরি কথা না বলে মেয়ে খবর জানতে এখন দরকার ফেসবুক আর টুইটারে স্ট্যাটাস চেক করা, ইমেইল পড়া। হায় রে যামানা।
মেয়েঃ শিট বাপ্স! হোয়াটস সো টাচি। ইউ আর সো ইম্যশোনাল। ইটস নট সাচ এ বিগ থিং। তোমার প্রসেসর সেকেলে, তোমার মাদারবোর্ডের বাস স্লো, তোমার হার্ডডিস্কে ব্যাডসেক্টর, তোমার মেমরি ফ্রিকোয়েন্ট লোড নিতে অক্ষম। চেঞ্জ অল দিজ ওলড মডেল হার্ডওয়্যারস। বি উইথ ট্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যাশন বাপ্স। বাই বাপ্স, আই উইলবি অনলাইন 24/7 ইন মেসেঞ্জার, সো চেক মি অন।

——— তিন বছর পর একই দিনে, একই সময়ে ———-

রবিবার, জুলাই 28 2013 সময় 13:13:13

মেয়েঃ বাপ্স, আই অ্যাম রুইন্ড, আই অ্যাম রুইন্ড, মাই সিস্টেম ক্র্যাশড বাপ্স, আই অ্যাম ডেড বাপ্স, আই অ্যাম ফিনিশড, আই অ্যাম ডেড?
বাবাঃ মারে তোর ফেসবুক আর টুইটার স্ট্যাটাস তো দুই মিনিট আগেই ‘সো হ্যাপি’ ছিলো। হটাৎ আবার কি হলো?
মেয়েঃ ড্যাম স্ট্যাটাস বাপ্স, মাই windows ক্র্যাশড অ্যা মিনিটস অ্যাগো। নট অনলি দ্যাট, আই হ্যাভ লস্ট অল মাই ডাটা। বিকজ মাই 1টেরা হার্ডডিস্ক হ্যাজ অলসো গন। লাস্ট মান্থে নতুন ল্যাপি কিনলাম বাপ্স। ওঁরা লাইসেন্সড windows এর হোম এডিশন দিয়েছিলো সাথে KasperSpace র লেটেস্ট অ্যান্টিভাইরাস। বাট লাস্ট নাইট মাই সিস্টেম গট ইনফেক্টেড বাই NSAKEY ওয়ার্ম। ইট টুক অল মাই পার্সোনাল ডাটা অ্যান্ড দেন সাম এরর অকার্ড। অ্যান্ড নাও দ্য সিস্টেম ইজ গন অ্যান্ড মেক মি অ্যা অ্যাস হোল।
বাবাঃ কেন রে মা এত কষ্ট পাবার কি আছে? তুই আমার মোবাইল দিযে নতুন স্ট্যাটাস দিয়ে দে ‘আই অ্যাম ইন ডেঞ্জার’। নিশ্চয়ই কেউ না কেউ সাহায্য করবে।
মেয়েঃ করবে না বাবা, করবে না। আসলে করার কেউ নেই। কারন বর্তমানে ফাকিং windows আর কেউ চালাচ্ছে না। যাঁরা নিজেরা কম বোঝে, সিকিউরিটি ফিটি নিয়ে অত ভাবে না তারাই ল্যাপির সাথে দেয়া আমার মতো সিস্টেমে নিজেকে অ্যাডাপ্ট করে নেয়। বাপ্স, আই অ্যাম গন বাপ্স, আই অ্যাম জাস্ট ফিনিশড।

উপরের যে কথোপকথনগুলো লিখলাম সেটা কোন বিশাল ঘটনাকে স্মরন করে নয় বরং হুট করেই। কেনো যেন মনের গহীন কোণ থেকে কুডাক ডাকা শুরু হলো। আর তাই কম্পুর সামনে কিছু লিখবো নিয়্যত করে বসা মাত্র আঙ্গুলের ডগাগুলো একটার পর একটা চাবি চাপতে চাপতে এই লেখা টা তৈরী করে ফেললো। ঢাকা সহ সারা দেশে যেভাবে মোবাইল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্রচলন হচ্ছে আর বিবিসি জানালার কল্যান ঘরে ঘরে যাচ্ছে, তাতে করে আশা করি আর মাত্র বছর দশেকের মাঝেই আমাদের দেশের ঘরে ঘরে এমন আল্ট্রা মর্ডান সন্তান গড়ে উঠবে। আর বাবা-মা রাও তাদের সাথে মানিয়ে নিতে ‘বাংরেজী’র অর্থ বুঝতে শুদ্ধ ‘ইংরেজি’ শিখবেন বিবিসি জানালায়। এমনিতেই ঢাকা সহ দেশের বড় শহরগুলোয় মাতৃভাষার বদলে ইংরেজী মাধ্যমে শিক্ষা আর প্রযুক্তির যথেচ্ছ ব্যবহারে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দিকভ্রান্ত। দেশের প্রযুক্তি পন্যগুলোকে কাজে না লাগিয়ে তাঁরা প্রতিনিয়ত, সময়ের আর শক্তির যে অপব্যবহার আর অপচয় করছে তাতে আমি নিজে বেশ হতাশ। প্রশ্ন জাগতে পারে তাহলে কি করা যায়? সেক্ষেত্রে রথি-মহারথিরা হয়তো বলবেন সরকারকে নীতিমালা, আইন ইত্যাদি প্রনয়ন আর প্রয়োগ করতে কিন্তু কি করা যায় তাৎক্ষনিকভাবে তা হয়তো বলতে চাইবেন না। আমি আমার এই ছোট্ট মাথার আরো ক্ষুদ্র মগজ দিয়ে সেই তাৎক্ষনিক কিছু করার চেষ্টা লিপ্ত হতে চাই। আর তাই আজকের এই লেখা। আমার এ লেখার উদ্দেশ্যই হলো প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে চলা। আর যাঁরা এই চলার পথে কোন বাধা পেয়ে আটকে যাবেন তাঁদের কে বাধা টপকাতে সাহায্য করা।

———- চলবে

লেখক:

রান্না করা, কম্প্যুটিং, ক্রিকেট

8 thoughts on “হালের ফ্যাশান আর ভবিষ্যৎ বালা-মুসিবত

    1. অভ্রদা লিখতে বড়ই ভয় লাগে। যদি কোন ভাষাগত ত্রুটিতে বঙ্গদেশীয় সন্তান কর্তৃক প্রহৃত হই ! তো? তবুও আজকাল প্রাণের মায়া ত্যাগ করে কিছু লেখালেখি করছি। দোয়া রেখেন।

  1. ভাইজান আপনার হালের ফ্যাসান ও বালা মুসিবত পড়ে ভালো লাগলো লিখতে থাকুন।

  2. রিং ভাই যে এভাবে লিখতে পারেন তাতো কখনো কল্পনাতেও ভাবি নি? প্রথম পর্ব পরলাম। ভালোই লাগলো। এবার দ্বিতীয় পর্বের দিকে মাউস কার্সন বাড়াচ্ছি…………

  3. খুব ভাল লাগল লেখাটা। এতো আনন্দের লেখা রেখে সেগুলো মাথায় আসে না সেগুলোই শেয়ার করায় আপনাকে …………………

লেখাটি পড়ে কেমন লাগলো মন্তব্য করুন

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  পরিবর্তন )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  পরিবর্তন )

Connecting to %s

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.